রেকর্ড বুকে ফ্রান্স বনাম বেলজিয়াম

দুই দলই রয়েছে তুখোড় ফরমে। ফেভারিট তকমা নিয়ে আসা ফ্রান্সের সঙ্গে বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের লড়াই। রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে দুই প্রতিবেশী দেশ।সেন্ট পিটার্সবার্গে ১০ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় ফাইনালে ওঠতে লড়বে ফ্রান্স ও বেলজিয়াম।

আর্জেন্টিনাকে শেষ ষোলোতে হারানোর পর কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়েকে হারিয়ে সেমির টিকিট পেয়েছে দিদিয়ের দেশমের দল ফ্রান্স। আর রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জাপানকে ৩-২ গোলে হারানোর পর শেষ আটে ব্রাজিলকে ২-১ গোলে হারিয়ে আজকের সেমিফাইনালের অন্য দল বেলজিয়াম। ধ্রুপদী লড়াই হয়তো নয়, কিন্তু নিজেদের ফুটবলীয় সামর্থ্য দিয়েই যে দল দুটি এ পর্যায়ে এসেছে, তা নিয়ে দ্বিমত নেই কারো। আজকের সেমিতে বিজয়ী দলের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনাও যে প্রবল, তা নিয়েও একমত ফুটবল বিশ্লেষকরা। দুই দলের মুখেমুখি লড়াইয়ের আগে চলুন ফ্রান্স আর বেলজিয়ামের রেকর্ড বুকে চোখ রাখি…।

ইউরোপের দুই প্রতিবেশী বেলজিয়াম ও ফ্রান্সের মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসটা যথেষ্টই দীর্ঘ। বেলজিয়ামের চেয়ে আর কোনো দলের বিপক্ষে বেশি ম্যাচ খেলেনি ফ্রান্স। পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে ৭৪ বার। এখানে জয়ের পাল্লা হেলে বেলজিয়ামের দিকে। ৩০ জয় তাদের; ফ্রান্সের ২৪ আর বাকি ১৯ ম্যাচ ড্র। অথচ বিশ্বকাপে এ দুটি দলের দ্বৈরথ মোটে দুইবার। ইউরোতে একবার। প্রতিবারই জয় ফ্রান্সের। ১৯৩৮ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে ৩-১ এবং ১৯৮৬ আসরের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলায় অতিরিক্ত সময়ে ৪-২ গোলে তারা হারায় বেলজিয়ামকে। আর ১৯৮৪ ইউরোর গ্রুপ পর্বে মিশেল প্লাতিনির হ্যাটট্রিকে ফরাসিরা জেতে ৫-০ গোলে। দুই দলের সর্বশেষ দিন মুখোমুখিতে অবশ্য জিততে পারেনি ফ্রান্স। দুই ড্রয়ের সঙ্গে এক জয় বেলজিয়ামের। ২০১৫ সালের জুনের সর্বশেষ প্রীতি ম্যাচে ফ্রান্সকে ৪-৩ গোলে হারায় ‘রেড ডেভিল’রা।

বিশ্বকাপের ১৩ আসরে খেলা বেলজিমায় এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে পৌঁছেছে বেলজিয়াম। এর আগে ১৯৮৬ সালে ফুটবলের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টের শেষ চারে পৌঁছেছিল ইউরোপের দেশটি। কিন্তু ঐ আসরের চ্যাম্পিয়ন দিয়েগো মারাদোনার আর্জেন্টিনার কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় তাদের।চৌদ্দবার বিশ্বকাপের আসরে খেলা ফ্রান্স ষষ্ঠবারের মতো সেমি-ফাইনালে পৌঁছেছে। অবশ্য শেষ চারে আগের পাঁচ লড়াইয়ের তিনটিতেই হেরেছে ফরাসিরা। ১৯৯৮ সালে ক্রোয়েশিয়া ও ২০০৬ সালে পর্তুগালকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা।

আন্তর্জাতিক ২৩ ম্যাচে অপরাজিত আছে রবের্তো মার্তিনেসের দল। ২০১৬ সালে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েলসের বিপক্ষে শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হেরেছিল তারা। এখন পর্যন্ত চলতি আসরের দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪টি গোল করেছে বেলজিয়াম। জাতীয় দলের হয়ে শেষ ১৩ ম্যাচে ১৭টি গোল করার পাশাপাশি ৩টি গোলে অবদান রেখেছেন রোমেলু লুকাকু। এবারের বিশ্বকাপে গোল করেছেন ৪টি। এ পর্যন্ত রাশিয়া বিশ্বকাপে আত্মঘাতী গোল বাদে বেলজিয়ামের হয়ে নয়জন খেলোয়াড় গোলের দেখা পেয়েছেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক আসরে একটি দলের হয়ে এর চেয়ে বেশি খেলোয়াড়ের গোল করার কীর্তি আছে মোটে দুটি।

২০০৬ সালে ইতালি ও ১৯৮২ সালে ফ্রান্স দলের সর্বোচ্চ ১০ জন করে খেলোয়াড় গোল করেছিলেন।দুই হলুদ কার্ড দেখায় বেলজিয়ামের ফুল ব্যাক তমা মুনিয়ে সেমি-ফাইনালে খেলতে পারবেন না। চলতি আসরে লক্ষ্যে রাখা শেষ ছয়টি শটেই গোলের দেখা পেয়েছে দিদিয়ের দেশমের দল।বিশ্বকাপ ও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ মিলিয়ে ফরাসি ফরোয়ার্ড অঁতোয়ান গ্রিজমান শেষ ছয় নক আউট ম্যাচে করেছেন সাত গোল।চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের পাঁচ ম্যাচে মাত্র চারটি গোল হজম করেছে ফ্রান্স। এনই